Close Menu
    Facebook X (Twitter)
    বার্তাদেশ
    • প্রথম পাতা
    বার্তাদেশ
    প্রথম পাতা » জীবনী » ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী: এক কিশোর বিপ্লবীর গল্প
    জীবনী শিক্ষা

    ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী: এক কিশোর বিপ্লবীর গল্প

    Khudiram Bose's Biography in Bengali
    By DevUpdated:June 30, 20258 Mins Read
    Share Facebook Twitter WhatsApp Telegram Copy Link
    ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী: এক কিশোর বিপ্লবীর গল্প
    Share
    Facebook Twitter WhatsApp Telegram Copy Link

    বাংলার এক সাধারণ ছেলে হয়ে উঠেছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় নাম। কিশোর বয়সেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু। সাহস, ত্যাগ, এবং দেশপ্রেমের প্রতীক এই যুবকের গল্প আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।

    সূচীপত্র:

    • ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী:
      • বাল্যকাল: তিন মুঠো ক্ষুদের বিনিময়ে প্রাণ ফিরে পাওয়া
      • ছাত্রজীবন: বইয়ের পাতায় বিপ্লবের অঙ্কুর
      • বিপ্লবের পথে প্রথম পা:
      • প্রথম চেষ্টা: বইয়ের ভেতর মৃত্যু!
      • লক্ষ্য বদল: মুজফ্ফরপুরে চূড়ান্ত আঘাত
      • সেই কালরাত্রি: ভুল গাড়ি, সঠিক বিস্ফোরণ
      • পালিয়ে চলা: এক ক্লান্ত বিপ্লবী, এক ভিজে শার্ট
      • বিচার: সাহসিকতার এক অনন্য উদাহরণ
      • ফাঁসি ও প্রতিক্রিয়া: হাসিমুখে ইতিহাস লেখা
      • মৃত্যু নয়, জন্ম এক আদর্শের: ক্ষুদিরাম বসুর উত্তরাধিকার
      • জাতীয়তাবাদের প্রতীক: এক নাম, এক আগুন
      • আধুনিক সময়ে ক্ষুদিরাম বসু: তরুণদের জন্য দিশারী
      • শেষ কথা: আজও প্রশ্নটা রয়েই গেল…
    • প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্নাবলী:

    ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী:

    বিষয়তথ্য
    জন্ম৩ ডিসেম্বর ১৮৮৯
    মৃত্যু (ফাঁসি)১১ আগস্ট ১৯০৮
    বয়স (মৃত্যুকালে)১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন
    পিতার নামত্রৈলোক্যনাথ বসু
    মাতার নামলক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী
    গ্রামমৌবনী, মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ

    ভাবুন তো, মাত্র আঠারো বছরের একটা ছেলে, স্কুল ব্যাগ ফেলে হাতে তুলে নিল বিপ্লবের অস্ত্র। যে বয়সে মানুষ হাসি ঠাট্টা আনন্দ ফুর্তি করে, সেই বয়সে সে দেশের জন্য হাসিমুখে এগিয়ে গেল ফাঁসির দড়ির দিকে। সেই ছেলেটির নাম – ক্ষুদিরাম বসু।

    বাল্যকাল: তিন মুঠো ক্ষুদের বিনিময়ে প্রাণ ফিরে পাওয়া

    ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর, মেদিনীপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে জন্ম নেয় ক্ষুদিরাম। বাবা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ছিলেন নাড়াজোলের তহসিলদার, আর মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী ছিলেন ধর্মপরায়ণা গৃহিণী।

    তিন কন্যার পর এই পুত্র সন্তান হলেও, আগের দুই ভাই ছোটবেলাতেই মারা যায়। তখনকার গ্রামবাংলায় এক বিশ্বাস ছিল যে, নবজাতককে প্রতীকীভাবে অন্য কাউকে বিক্রি করে দিলে সে বেঁচে থাকবে। শোনা যায়, ক্ষুদিরামের মা ভয় পেয়ে ছেলেকে বাঁচানোর জন্য তিনি নিজের দিদি অপরূপার কাছে তিন মুঠো ক্ষুদের (চালের টুকরো) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। সেই থেকেই নাম হয়ে যায় ক্ষুদিরাম।

    দুর্ভাগ্যবশত, মাত্র ৫ বছর বয়সে মাকে, আর ৬ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে সম্পূর্ণ অনাথ হয়ে পড়েন ক্ষুদিরাম। জীবনের প্রথম পাঠই ছিল – সংগ্রাম।

    ছাত্রজীবন: বইয়ের পাতায় বিপ্লবের অঙ্কুর

    তাঁর বড় দিদি ও জামাইবাবু অমৃতলাল রায় তাঁকে তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুলে ভর্তি করান। পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক ছিল, কিন্তু চোখের সামনে চলা অন্যায় তাঁকে নাড়া দিত বেশি। ক্লাসে ভালো ছাত্র, কিন্তু মন পড়ে থাকত স্বাধীনতার চিন্তায়।

    ১৯০২ সালে শ্রী অরবিন্দ ও ভগিনী নিবেদিতা মেদিনীপুরে জনসভা করতে এলে, সেই সভায় ক্ষুদিরাম দাঁড়িয়ে রইলেন এককোণে। তারা বললেন দেশের কথা, স্বাধীনতার কথা। ক্ষুদিরামের হৃদয়ে আগুন জ্বলে উঠল। সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল শিশুমনের দ্বিধা। তিনি মাত্র ১৫ বছর বয়সে যোগ দিলেন অনুশীলন সমিতি নামের গোপন বিপ্লবী সংগঠনে।

    আরও পড়ুন: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী: এক অগ্নিযোদ্ধার বীর গাথা

    বিপ্লবের পথে প্রথম পা:

    ১৬ বছর বয়সে তাঁর নাম জড়ায় ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপে। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি বিলি করেন বিপ্লবী পুস্তিকা। ধরা পড়েন, কিন্তু তাতে ভয় পায়নি মন। উল্টে মন আরও একাগ্র হয় মাতৃভূমির প্রতি। তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে, পেনসিল দিয়ে স্বাধীনতা আসে না। তার জন্য দরকার সশস্ত্র সংগ্রাম আর বুক ভরা সাহস।

    মারণ সিদ্ধান্ত: বিচারক কিংসফোর্ডকে কেন?

    ডগলাস কিংসফোর্ড – এই নামটি তখন ভারতীয় বিপ্লবীদের কাছে এক আতঙ্ক আর অন্যায়ের প্রতীক। আলিপুর প্রেসিডেন্সি আদালতের এই বিচারক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দেন। জাতীয়তাবাদী তরুণদের দমন করতে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর। বারীন্দ্র ঘোষ, হেমচন্দ্র কানুনগো – এই দুই বিপ্লবী নেতা ঠিক করলেন, এ অন্যায়ের জবাব দিতে হবে। দুজন কিশোরের উপর দায়িত্ব পড়ল। একজন ক্ষুদিরাম বসু, আরেকজন প্রফুল্ল চাকী।

    প্রথম চেষ্টা: বইয়ের ভেতর মৃত্যু!

    প্রথম পরিকল্পনাটি ছিল অনেকটা গোয়েন্দা গল্পের মতোই চমকপ্রদ। একটি ক্যাডবেরি কোকো টিনে রাখা হল শক্তিশালী বোমা। সেটি আবার রাখা হল একটি ইংরেজি আইনের বইয়ের ভিতরে। তারপর সেই অভিনব উপহার পাঠানো হল বিচারক কিংসফোর্ডকে। ভাগ্যক্রমে, কিংসফোর্ড বইটি না খুলেই বইয়ের শেলফে তুলে রাখেন। তাই তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু এমন “পাঠ্যপুস্তক” পড়ার সুযোগ পেলে ইতিহাস হয়তো একটু অন্যরকম হতো!

    লক্ষ্য বদল: মুজফ্ফরপুরে চূড়ান্ত আঘাত

    ব্রিটিশ সরকার কিংসফোর্ডকে মুজফ্ফরপুরে বদলি করল। খবর পেয়ে সেই মতো প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরাম বসু যাত্রা করলেন বিহারের পথে। নতুন পরিচয়ে আশ্রয় নিলেন ধর্মশালায় – একজন “দীনেশ চন্দ্র রায়,” অন্যজন “হরেণ সরকার”। তারা তিন সপ্তাহ ধরে নজর রাখলেন কিংসফোর্ডের উপর।

    সেই কালরাত্রি: ভুল গাড়ি, সঠিক বিস্ফোরণ

    ১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল রাত ৮টা ৩০ মিনিট নাগাদ, প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরাম বসু কিংসফোর্ডের গাড়ির অপেক্ষায় গা ঢাকা দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন গেটের পাশে। সেই সময় তাঁরা কিংসফোর্ডের গাড়ির মতো দেখতে একটি গাড়ি দেখেন। তাঁরা গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন। দুর্ভাগ্যক্রমে, সেই গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না। সেটা ছিল প্রিঙ্গল কেনেডির স্ত্রী ও মেয়ের গাড়ি। মেয়েটি সেদিন রাতেই মারা যান, আর তার দু’দিন পর তার মা।

    পালিয়ে চলা: এক ক্লান্ত বিপ্লবী, এক ভিজে শার্ট

    বিস্ফোরণের পর দু’জন দুই দিকে পালিয়ে গেলেন। ক্ষুদিরাম প্রায় ২৫ মাইল হেঁটে পৌঁছান ওয়াইনি স্টেশনে। পায়ে জুতো নেই, মুখে ধুলো, কপালে ঘাম। এক চায়ের দোকানে দাঁড়িয়েছিলেন একটু জল খেতে। দুজন কনস্টেবলের সন্দেহ হওয়ায় তারা তাঁকে জেরা করতে শুরু করে। ধরা পরে যান ক্ষুদিরাম বসু। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় ২টি রিভলভার, ৩৭ রাউন্ড গুলি, একটি মানচিত্র, রেলের সময়সূচী আর নগদ ৩০ টাকা। পালানোর সব বন্দোবস্ত ছিল, অথচ সময় ছিল না! অন্যদিকে, প্রফুল্ল চাকী ট্রেনে পালাতে গিয়ে এক পুলিশ অফিসারের ফাঁদে পড়েন এবং ধরা পড়ার আগেই নিজের বন্দুক দিয়ে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন।

    বিচার: সাহসিকতার এক অনন্য উদাহরণ

    গ্রেপ্তার হওয়ার পর ক্ষুদিরাম প্রথমে সব দোষ স্বীকার করেন, ভেবে প্রফুল্ল বেঁচে আছেন। পরে যখন প্রফুল্লর মৃতদেহ দেখেন, তখন বোঝেন সব দায়িত্ব তাঁর ঘাড়েই এসেছে। ২১ মে ১৯০৮ তারিখে বিচার শুরু হয়। বিচারক ছিলেন কর্নডফ, সঙ্গে দুই ভারতীয় বিচারপতি।

    তাঁর পক্ষে অনেক বাঙালি আইনজীবী লড়েন বিনা পারিশ্রমিকে। তাঁরা বলেন, এত কম বয়সে কেউ এমন পরিকল্পনা করতে পারে না। তাঁর কিশোর বয়স, উদ্দেশ্য, আত্মবলিদান – এই সব কিছুই সামনে এল আদালতে। কিন্তু ব্রিটিশ আইন কানে তুলল না। তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। বিচারক বললেন, “তুমি জানো তো, ফাঁসি কী?” ক্ষুদিরাম হেসে বললেন, “হ্যাঁ জানি, তবে সময় পেলে আপনাকে বোমা বানানো শেখাতাম!”

    ফাঁসি ও প্রতিক্রিয়া: হাসিমুখে ইতিহাস লেখা

    ১১ আগস্ট ১৯০৮, সকাল ৬ টার সময় ক্ষুদিরাম হাসিমুখে ফাঁসির মঞ্চে ওঠেন, আর তাঁর মুখে শেষ শব্দ – “বন্দেমাতরম”। এই কিশোরের দৃষ্টিতে ছিল না মৃত্যুর ছায়া, বরং ছিল এক বিজয়ীর দীপ্তি। আর ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ইতিহাসে চিরকালীন ভাবে লেখা হয়ে গেল এক কিশোরের নাম – ক্ষুদিরাম বসু।

    মৃত্যু নয়, জন্ম এক আদর্শের: ক্ষুদিরাম বসুর উত্তরাধিকার

    ফাঁসির পরে বাঙালির হৃদয়ে ঝড় উঠল। তাঁর মৃত্যুর পর এমন একটা তরঙ্গ উঠল, যা ব্রিটিশ সরকার কল্পনাও করতে পারেনি। কিশোর-যুব সমাজের হৃদয়ে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল আগুন। তাঁর মৃত্যুই যেন এক নতুন বিপ্লবের জন্ম দিল।

    • তাঁকে সম্মান জানাতে “ক্ষুদিরাম ধুতি” পড়া শুরু হল। সাদা ধুতি, পাশে লেখা “ক্ষুদিরাম”।
    • পীতাম্বর দাস লিখলেন সেই অমর গান—“একবার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি…”
    • নজরুল লিখলেন কবিতা, যেখানে রক্ত, আগুন, প্রতিবাদ—সবই মিশে গিয়েছিল তাঁর কলমে।

    হেমচন্দ্র কানুনগো লিখেছিলেন –

    “ক্ষুদিরামের চরিত্রে ছিল দুর্দমনীয় সাহস। বক্তৃতা নয়, বাস্তব কাজ করতে চেয়েছিল সে। অন্যায় দেখলে দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিরোধ করত। ভয় নামের বস্তুটা তার অভিধানে ছিল না।”

    জাতীয়তাবাদের প্রতীক: এক নাম, এক আগুন

    ক্ষুদিরাম বসু – এই নামটি শুধু ইতিহাস বইয়ের পাতায় নয়, প্রতিটি সজাগ দেশপ্রেমিকের হৃদয়ে লেখা আছে। তিনি ছিলেন না কোনও বড় নেতা, না কোনও রাজপথের বক্তা। কিন্তু তাঁর আত্মত্যাগই হয়ে উঠল এক জনতার জাগরণের মশাল।

    • তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, কিশোর বয়সেও বিপ্লব সম্ভব।
    • তিনি শিখিয়েছেন, ভয় নয়, বরং সাহস দিয়ে জয় করতে হয় অন্যায়কে।
    • তিনি প্রমাণ করেছেন, মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করাই আসল সাহস।

    আধুনিক সময়ে ক্ষুদিরাম বসু: তরুণদের জন্য দিশারী

    তিনি শুধু নাম নন, তিনি এক ভাবনা। এক আগুন, এক প্রতিবাদের প্রতীক। তাঁর আত্মত্যাগ কেবল ইতিহাস নয়, এক জ্বলন্ত প্রদীপ যা আজও তরুণ হৃদয়ে আগুন জ্বালায়। ক্ষুদিরাম বেঁচে আছেন। না, শুধু স্মৃতিতে নয় – আমাদের হৃদয়ে, রক্তে, সাহসে। আজকের দিনে যখন অনেক তরুণ দিশাহীন, বিভ্রান্ত – তখন ক্ষুদিরামের জীবন এক উদাহরণ। তিনি শিখিয়েছেন—

    • স্বপ্ন দেখো, তবে শুধু নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য
    • অন্যায়ের সামনে দাঁড়াও, ভয় নয়, বিবেককে সঙ্গী করো
    • সাহসের পথে হাঁটো, ত্যাগের মধ্যেই জন্ম নেয় শ্রেষ্ঠত্ব

    শেষ কথা: আজও প্রশ্নটা রয়েই গেল…

    আজ আমরা স্বাধীন। নিজের মত প্রকাশ করতে পারি, ভোট দিতে পারি, সোশ্যাল মিডিয়ায় মত দিতে পারি—তখন কি একবারও মনে পড়ে, কে রক্ত দিল এই অধিকার কেনার জন্য? একটি কিশোর ছেলে, যে হাসিমুখে বরণ করেছিল মৃত্যুকে, যাতে তুমি আমি স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারি। তাঁর মত সাহসিকতা, দেশপ্রেম আর ত্যাগকে আমরা কি শুধু বইয়ের পাতায় রেখে দিয়েছি? একটু ভেবে দেখুন।

    👉 এই লেখাটি যদি আপনার মনকে ছুঁয়ে যায়, তবে শেয়ার করুন – কারণ সাহসের গল্প যত ছড়াবে, দেশ তত জাগবে।

    প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্নাবলী:

    ক্ষুদিরাম বসু কে ছিলেন?

    ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক উজ্জ্বলতম দীপ্তি। তিনি ছিলেন এক তরুণ বিপ্লবী, যিনি মাত্র আঠারো বছর বয়সে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেন। তাঁর হাসিমুখে শহিদ হওয়া আজও প্রেরণা জোগায় দেশের প্রতিটি কিশোর-যুবাকে।

    ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম ও মৃত্যুর সাল কত?

    ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম হয় ৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায়। শহিদ হন ১১ আগস্ট, ১৯০৮ সালে, মাত্র ১৮ বছর বয়সে। তাঁর জীবনের এই ছোট্ট পরিসরই দেশের জন্য এক অমর কাব্য হয়ে উঠেছে।

    তিনি কী কারণে ফাঁসির আদেশ পান?

    ব্রিটিশ বিচারক ডগলাস কিংসফোর্ডের উপর বোমা নিক্ষেপের অভিযোগে ক্ষুদিরাম বসুকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও সেই হামলায় কিংসফোর্ড বেঁচে যান, কিন্তু ভুল গাড়িতে থাকা দুই ইংরেজ মহিলা মারা যান। এই ঘটনায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

    ক্ষুদিরামের সঙ্গী কে ছিলেন সেই অভিযানে?

    প্রফুল্ল চাকী ছিলেন তাঁর সহযোদ্ধা। এই দুই কিশোর একসঙ্গে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেন ও বাস্তবায়ন করেন। পরে, পুলিশের হাতে পড়ার আগেই প্রফুল্ল আত্মহত্যা করেন, যেন তাঁকে ব্রিটিশদের হাতে পড়তে না হয়। এই আত্মবলিদান এক যুগল বিপ্লবীর গল্প হয়ে রয়েছে।

    ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কী প্রভাব ফেলেছিল?

    তাঁর মৃত্যু যেন ঘুমন্ত দেশবাসীকে জাগিয়ে তুলেছিল। প্রতিটি গলিতে গলিতে, স্কুলে-কলেজে, বাড়ির উঠোনে উঠে এসেছিল একটাই নাম—ক্ষুদিরাম বসু। তাঁর আত্মবলিদান কিশোরদের মধ্যে জন্ম দিয়েছিল নতুন বিপ্লবী চেতনার। তাঁর হাসিমুখে ফাঁসি গ্রহণ শুধু ইতিহাস নয়, এক জাতীয় স্লোগানে রূপান্তরিত হয়েছিল।

    আজও কি ক্ষুদিরামের স্মৃতিচিহ্ন টিকে আছে?

    অবশ্যই। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর নামে রাস্তা, স্কুল, মূর্তি এবং এমনকি রেলস্টেশনও রয়েছে। শুধু ইট-পাথরের স্মৃতিস্তম্ভ নয়, তাঁর নাম আজও উচ্চারিত হয় অন্তরের শ্রদ্ধায়।

    আজকের তরুণদের জন্য ক্ষুদিরামের জীবন কতটা প্রাসঙ্গিক?

    বর্তমান যুগে যখন অনেকেই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে, তখন ক্ষুদিরাম শেখান—“নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য বাঁচো।” আজকের তরুণদের দিশাহীনতা, আত্মসম্মান হারানো, আদর্শের শূন্যতা—এই সব কিছুর প্রতিষেধকই ক্ষুদিরামের জীবন দর্শন। তাঁর মত সাহস, আদর্শ আর আত্মত্যাগই হতে পারে আগামী প্রজন্মের দীপ্ত পথদর্শী।

    Khudiram Bose Khudiram Bose Biography ক্ষুদিরাম বসু ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী
    Follow on Facebook Follow on X (Twitter)
    Share. Facebook Twitter WhatsApp Telegram Copy Link

    সম্পর্কিত খবর

    মহাত্মা গান্ধীর জীবনী: এক মহাত্মার জীবন দর্শন

    মহাত্মা গান্ধীর জীবনী: এক মহাত্মার জীবন দর্শন

    June 22, 2025Updated:June 30, 2025
    নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী: এক অগ্নিযোদ্ধার বীর গাথা

    নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী: এক অগ্নিযোদ্ধার বীর গাথা

    June 15, 2025Updated:June 30, 2025
    মনমোহন সিংয়ের জীবনী: এক নীরব স্থপতির আদর্শ

    মনমোহন সিংয়ের জীবনী: এক নীরব স্থপতির আদর্শ

    June 8, 2025Updated:June 30, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    সাম্প্রতিক খবর
    ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী: এক কিশোর বিপ্লবীর গল্প

    ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী: এক কিশোর বিপ্লবীর গল্প

    মহাত্মা গান্ধীর জীবনী: এক মহাত্মার জীবন দর্শন

    মহাত্মা গান্ধীর জীবনী: এক মহাত্মার জীবন দর্শন

    নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী: এক অগ্নিযোদ্ধার বীর গাথা

    নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী: এক অগ্নিযোদ্ধার বীর গাথা

    মনমোহন সিংয়ের জীবনী: এক নীরব স্থপতির আদর্শ

    মনমোহন সিংয়ের জীবনী: এক নীরব স্থপতির আদর্শ

    এ পি জে আব্দুল কালামের জীবনী: এক অনুপ্রেরণামূলক অধ্যায়

    এ পি জে আব্দুল কালামের জীবনী: এক অনুপ্রেরণামূলক অধ্যায়

    Facebook X (Twitter)
    • Sitemap
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Affiliate Disclosure
    • Terms & Conditions
    © 2025 Bartadesh. All Rights Reserved.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.